পোল্যান্ডে রাশিয়ার গ্যাস সরবরাহ অল্প সময় বন্ধ থাকার পর ফের চালু করা হয়েছে বলে ইউরোপীয় ইউনিয়ন গ্যাস ট্রান্সমিশন অপারেটরদের দেওয়া তথ্যে দেখা গেছে।
এর আগে পোল্যান্ড এবং বুলগেরিয়া উভয়ই জানিয়েছিল, বুধবার স্থানীয় সময় সকাল ৮টা থেকে তাদের গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেবে রাশিয়া।
বুধবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের গ্যাস ট্রান্সমিশন অপারেটরদের নেটওয়ার্ক জানিয়েছে, পোল্যান্ডে গ্যাস সরবরাহ কিছু সময়ের জন্য বন্ধ রাখার পর ফের চালু করা হয়েছে, সরবরাহ শূন্যে নেমে যাওয়ার পর আবার বাড়তে শুরু করেছে।
বুলগেরিয়ার গ্যাস সরবরাহে কোনো বিঘ্ন ঘটেছে কি না, সে বিষয়ে কিছু জানা যায়নি।
রাশিয়ার বৃহদ জ্বালানি কোম্পানি গ্যাজপ্রমের সঙ্গে পোল্যান্ডের বার্ষিক ১০ দশমিক ২ বিলিয়ন কিউবিক মিটার (বিসিএম) গ্যাস সরবরাহের চুক্তি আছে। এই গ্যাস পোল্যান্ডের জাতীয় চাহিদার প্রায় ৫০ শতাংশ পূরণ করে।
এর আগে পোল্যান্ডের রাষ্ট্রায়ত্ত তেল-গ্যাস কোম্পানি পিজিএনআইজি জানিয়েছিল, বুধবার
ইউরোপের কেন্দ্রীয় সময় (সিইটি) সকাল ৮টা থেকে ইউক্রেইন ও বেলারুশ হয়ে আসা গ্যাজপ্রমের সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হবে। কিন্তু ওয়ারশ জানিয়েছিল, গ্যাস সংরক্ষণাগারগুলো ৭৬ শতাংশ পূর্ণ থাকায় রিজার্ভ থেকে তাদের গ্যাস তোলার দরকার হবে না।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ক্রেমলিনের কট্টর বিরোধী পোল্যান্ড ইউরোপের সেই দেশগুলোর একটি যারা ইউক্রেইন আক্রমণের জন্য রাশিয়ার বিরুদ্ধে সম্ভাব্য সবচেয়ে কঠোর নিষেধাজ্ঞা দিতে সচেষ্ট।
লুহানস্ক অঞ্চলে ইউক্রেইনের এক সেনা হেঁটে যাচ্ছেন। ছবি: রয়টার্সরাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ‘অবন্ধুসুলভ’ দেশগুলোকে আমদানি করা গ্যাসের দাম রুবলে পরিশোধ করার জন্য বলেছেন, অন্যথায় বিদ্যমান চুক্তি স্থগিত থাকবে বলে জানিয়েছেন। এ পর্যন্ত রাশিয়ার গ্যাসের ইউরোপীয় ক্রেতাদের মধ্যে অল্প কয়েকটি দেশ তার প্রস্তাব অনুযায়ী প্রস্তুতি নিয়েছে।
ইউরোপের বার্ষিক জ্বালানির একতৃতীয়াংশ পূরণ করে রাশিয়ার গ্যাস। ইউক্রেইনে গত মাসে শুরু হওয়া আক্রমণের প্রতিক্রিয়ায় রাশিয়ার উপর যেসব অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে তার জবাবে গ্যাসের দাম রুবলে পরিশোধ করতে বলেছে মস্কো।
ইউক্রেইনকে নিরস্ত্র ও নব্যনাৎসীমুক্ত করতে দেশটিতে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ চালাচ্ছে বলে দাবি করা মস্কো বলেছে, নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে পশ্চিমা দেশগুলো তাদের বিরুদ্ধে ‘অর্থনৈতিক যুদ্ধ’ শুরু করেছে।
বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, রাশিয়া যদি তার গ্যাসের মূল্য রুবলে পায়, সেক্ষেত্রে দেশটি পশ্চিমাদের দেওয়া বেশকিছু অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা পাশ কাটাতে পারবে।
রাশিয়া থেকে আমদানি করা গ্যাসের ওপর প্রায় সম্পূর্ণভাবে নির্ভরশীল দেশ বুলগেরিয়া বলেছে, গ্যাজপ্রমের সঙ্গে থাকা চুক্তির সব বাধ্যবাধকতা পূরণ করেছে তারা আর রুবলে গ্যাসের মূল্য পরিশোধের নতুন প্রস্তাবনা চুক্তির লঙ্ঘন।
প্রতিবেশী তুরস্ক ও গ্রিসের মধ্যে দিয়ে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির বিষয়ে প্রাথমিক আলোচনা করে রেখেছে বুলগেরিয়া।
গ্যাজপ্রম বলেছে, তারা এখনও পোল্যান্ডে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করেনি কিন্তু ওয়ারশকে মূল্য পরিশোধের নতুন ‘নির্দেশনা’ অনুযায়ী গ্যাসের দাম দিতে হবে। তবে বুলগেরিয়ার বিষয়ে তারা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।